পাখিদের সাথে || সাম্য রাইয়ানের কবিতা

 


১.


পাখিসব উড়ে গেলে, আকাশ ফাঁকা হবে,
আমরা তখন হাত ধরব শেষবার। ঘুঘু ডাকছে—
ভাষার আবরণ পেরিয়ে তোমার সাথে কবর দেখতে যাবো৷
মাটি শুধু কৃষকের নয়, প্রতিটি মৃত্যুও তাই—যারা
শুয়ে পড়ে, শেষব্দি তারাই মাটিকে অর্থ দেয়।
মাটি তবু ধরে রাখে পায়ের চিহ্ন, যারা চলে গেছে—
লিখে রাখে সেইসব নাম৷ যতক্ষণ লেগে থাকে 
ঠোঁট, ততটাই আমাদের বেঁচে থাকা৷

২.

তুমি ফু দিলে জ্বলে ওঠে আগুন, তুমি ফু দিলেই
নিবে যায়! সূত্র জানো অন্ধ জাদুকর৷ রাতারাতি
বদলে নিচ্ছো হৃৎপিণ্ড৷ অথচ পাখিরাত আমি
ঘুমোতে পারি না; হরদম হুইসেল হুইসেল
মস্করার মধ্যে ফেঁসে গেছি সন্ধ্যায়
মিথ্যে বৃষ্টি নামছে যখন, শহর পুড়ে যাচ্ছে
কোনোদিকে মন নেই৷ দয়া করো প্রেম—
ছেড়ে দিও না; আগ্নেয়গিরি টানছে আমাকে!

৩.

ভাতের বলক উঠছে তখন, জীবন পুড়ে যাচ্ছে—
ভীষণ সাধারণ এই চিত্রকল্প৷ কিন্তু পুড়ে যাচ্ছে
অসাধারণভাবে৷ স্থিরচিত্রে ভেঙে পড়ছে ডানা
পৃথিবীর যাবতীয় স্বপ্ন তখন, ঠিক ঐ সময়
আমার চোখে এসে ভর করে—মানুষ এড়িয়ে
শ্রাবণের হাওয়া সটান হাজির আমার কিচেনে৷
বৃষ্টি ও আগুন হাত ধরে হাঁটে—সত্য সহোদর
বলকের মতো তখন আমার ছড়িয়ে পড়ছে দেহ৷

৪.

যদি ঘুমিয়ে পড়ি, এইটুকু তার অশনিসংকেত
আমাকে জাগিয়ে রাখবে ক্ষত, পুরনো প্রেমের গান
কিছুমাত্র আশ্চর্য নয়, এটুকু স্বাভাবিক
যেমন ঘুমের মধ্যে—আমি লিখে ফেলি একেকটি 
কবিতা, আর প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্র চালান৷ 
কিন্তু তুমি? ঘুমোলে বলতে পারো না—সকালে
পরীক্ষা হবে কী না! কোন কোন দিন আমারও 
এমন হয়, ঘুম ভেঙে দেখি—দুটো পাখি মরে গেছে!

৫.

দীর্ঘকবিতা তুমি, সন্ধ্যাপাখি৷ অনেক দীর্ঘ যেমন 
বুড়িমারী এক্সপ্রেস, এমনকি তার জন্য অপেক্ষাও! 
একেকটা বগি উঠে আসে কবিতার পংক্তি থেকে, 
জুড়ে যায় অনুচ্ছেদে; পংক্তির পর পংক্তি, 
বগির পর বগি—গড়ে তোলে দীর্ঘকবিতা এক
বুড়িমারী সবুজ ট্রেন৷ জীবনের যত 
ঠিকঠাক ফুল ফুটে ওঠে ভুল মানুষের জন্য৷
দীর্ঘ গল্প ঠেলে এই ট্রেনও তোমার কাছে যায়!

Post a Comment

1 Comments

  1. লাভ ইউ বার্ড লাভ ইউ কবি

    ReplyDelete