১.
আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে শুনতেছি
যতোসব বৃষ্টির কলকাকলি
চোখে পাহাড় পাহাড় ঘুম জড়ায়ে
সবুজ স্বপ্নে ছেয়ে থাকা পিচ্ছিল পথে
হাঁটতেছি ঘোরে
খুঁজতেছি দরজা
হয়তোবা হাতে কিছুটা চাবি,
যতোটা খুলিতে অর্গল;
দোর খুলি। পর্দা সরাই। শূন্যতার।
তমসা তীব্র রাতের মুখরতায়
কাঁপতেছে দিন। ভিজতেছে বৃষ্টি।
হু হু আকাশ।
আরো হু হু চাঁদের দিনে,
রাত খোঁজার মতো করে
একটা দিন ডুবে যায় গর্তে।
কুয়াশা নাই। হিম নাই।
তবু কোন সে বিরহে কাঁপে রাত?
রাতভর বৃষ্টি। কাঁপে ভোরের ভেজা কাঁধ।
২.
হয়তোবা সরল দৃষ্টি,
বৃষ্টি শেষে ঝরে যাব।
দুঃখ কামিনী না ফোটার
রোদ দেখে চিনে গেছি
কতোটা দীর্ঘতর ছায়া ফেলে
অন্ধকারে মিশে যাবে
একাকী বৃক্ষের হুতাশ
দুঃখের তীব্র সুতোয়
বুনতেছি গত জনমের শীতবস্ত্র
শীত আসেনি যদিও, শীতলতা তবু-
বর্ষা প্রবল, ক্ষীণ দৃষ্টিতে বুজে আসে আলো-
ম্রিয়মাণ।
শাঙন-সন্ধ্যা-তীরে
৩.
এই শহরে বৃষ্টি নামে
কিন্তু কারো জন্য না।
আমাদের কচ্ছপক্লান্ত শরীর,
বৃষ্টি ধুয়ে দেয়া ভেজা মাটির উপমাতে
পাতা পাতা সবুজ।
আমরা গেঁথে যেতে থাকি মাটিতে
যেন বা বৃক্ষ-বেদনা-বিলাপ।
বৃষ্টির ফোঁটার মতো মুহুর্মুহু টুপটাপে
বলকাইতে থাকা কথারা
আটকে থাকে ঠোঁটে
আমাদের কথা হয় না।
মাথার ভেতরে জন্ম নেয়া
পত্রহীন গাছ শিরশির
শরীর শুকায়ে আসে।
নীলাভ আলোয় তাকায় মিররে
আয়নায় মুখ নাই, দেখি-
বজ্র বিষাদের ঝড়।
৪.
আমাদের পায়ের নিচে বিকেল ভাঙে
বৃষ্টির মুখরতায়
এমন বরিষণ ভেঙে ভেঙে
কতোটা আঁকা হলো দৃশ্যপট?
কতোটা ভ্যানগঘ হলুদ হলো
শীত শীত সরিষা ক্ষেতে?
কতোটা ঘ্রাণ লেগে থাকে
জমে থাকা আত্মার বরফে?
ধার দাও তারে কিছুটা শঙ্খচিল ডানা
ঝরুক বৃষ্টি ভীষণ,
এই অবেলায়
ধবল বকের পালকে।
৫.
বেখেয়ালি লিরিকের তুমুল বাকোয়াজি বৃষ্টি বাজে
এই ঝরঝর শ্রাবণ সান্ধ্য দিনে। শূন্য আত্মার শুনশানে।
মায়াবী ঘাতক কোলাহল ভেসে আসে
বাতাসের ফিসফাসে
অবিরাম বরিষণে
বহুতল স্বপ্ন আঁকা এক শনিবার সকালের বরবাদ ঘুম
আমারে টেনে নিয়ে যায় চন্দ্রগ্রস্ত অষ্টমীর রাতে
ব্লারি স্বপ্নের ভেঙে যাওয়া দৃশ্যে বৃষ্টি নামে
গলে পড়ে সবুজ পাহাড়।
0 Comments