সোয়েব মাহমুদ এর কবিতা


কবিতা- ভয় পাবেন না


মৃত্যুর ভারী নিঃশ্বাস ছুঁয়ে গ্যাছে সবাইকে,

টিকটিকির লালাটানা জিভের আওয়াজে আলোগুলো দুলছে,

ভয় পাবেন না, লাশ সরিয়ে নিচ্ছি।

আলো গুলো তীব্র অভিমানে আলাদা হয়ে ফিরে যাচ্ছে।

 

নিয়ে যাচ্ছে, মাটির উপর আছড়ে পড়া শব্দ,

রক্তের উপর দাড়ানো বিপ্লব অথবা একটা মিছিল।

একটা কবিতা যার সবটাই মিথ্যে বানোয়াট অপবাদ বুকেপিঠে চেপে!

 

কবিতা নিয়ে যাচ্ছে যাক,

কবিতা নিয়ে গেলে কি হবে?

কিছুইনা, দেখুন ঐযে টেবিল চেয়ার,

আলোর একপাশে অন্ধকারে গোল হয়ে নাচছে।

সাংগঠনিক চোয়ালে নিজের কোবতের এটিএম বুথ রুমাল দিয়ে জায়গা করছে,

খিস্তি খেউর, জলসা, সিটিতে দপ করে প্যান্টের ভেতর চুলকানি।

"ভয় পাবেন না, অহেতুক আপনাদের রক্ত আন্দোলিত করা কবিতা সরিয়ে নিচ্ছি।"

 

সমস্ত ভীড় বুঁদ হয়ে চুপচাপ, শুনছে হস্তমৈথুণের সোল্লাস।

মেয়েরা অবাকবিভোর,

কিছু অশ্রাব্যতা হরমোনকে সম্মোহিত করে,

কিছু অশ্লীতা, কিছু মৃত্যু অত্যন্ত স্পষ্টতায় কোমর নাচিয়ে যৌনমিলনের প্রস্তাব দেয়।

 

"ভয় পাবেন না, আমরা জনপদের পোষা কবি।

ভয় পাবেন না, ভয় পাবার কিছু নেই।

কবিতা থেকে লোভী আঙুল সরাতে যারা এসেছিলো,

সবাইকে পাশে নিয়ে যে মিছিল শুরু হয়েছিলো যে 

উৎসব ছিলো শ্লোগানের  থেমে গ্যাছে ফেব্রুয়ারীর; শেষেই।

 

অগ্রাহ্য করে,

একটানা মুখবর্ষনে বাতিলের খাতায়, মেরে ফেলেছি সব।

ভয় পাবেন না, ভয় পাবার কিছু নেই।

মরে গ্যাছে নবারুন এবং রুদ্র।

ভয় পাবেন না, বেঁচে আছে পোষা কবি,

বেঁচে থাকে স্বৈরাচারকে তোষামোদ করা রাহ্ মান; হয়ে রাষ্ট্রীয় কবি।

ঘাম মুছুন, এসি ছাড়া হচ্ছে।

ভয় পাবেন না, আজ থেকে কবিতায় কোনও শব্দ আর আওয়াজ করছেনা।"

এইযে দেখুন, খাতার উপরে শান্ত ঠোঁট মাথা নীচু কবিতায়  রাস্তা হাটছে শোকপ্রস্তাবে।

 

ক্ষুধা নিয়ে কোন শিল্প চুদিও না 

 

তুমি ক্ষুধা নিয়ে অনবরত কথা বলছো 

অথচ তুমি জানো না কতটা ক্ষুধা পেলে 

তলপেট মুচড়ে ওঠে পিঠ মুষড়ে পরে ব্যথায় -

লালাপূর্ন বমিতে কতটা যন্ত্রনায় বেকে যায় শরীর। 

 

তুমি জানোনা

তুমি জানো না কতটা ক্ষুধায় চাল হয়ে ওঠে ঈশ্বর, টাকা অসহায় ক্ষুধার সামনে

একপ্লেট ভাতের কাছে আজন্ম পরাস্ত মানুষ

থামো থামো বলছি -

 

আপাদমস্তক কুসংস্কারাচ্ছন্ন 

যুক্তিবোধহীন মেরুদণ্ডহীন মধ্যবিত্ত 

তুমি থেমে যাও - ক্ষুধা নিয়ে অতটা শিল্প তুমিও না।

 

হাড় জিরজির শরীরের চামরায় যদি 

ক্ষুধার গন্ধ না পাও?

যদি তুমি বলে দিতে না পারো ভাতের রং কি

যদি তুমি বলতে না পারো 'মুঠো চালে 

' গ্লাস ফেনের শরবত হয়

তবে বাদ দাও - ক্ষুধা নিয়ে শিল্প চুদিও না।

 

তারচেয়ে 

 

তুমি বরং রাস্তায় দাঁড়িয়ে 

একটু খুঁজলেই পেয়ে যেতে পারো ক্ষুধার্ত মানুষ - দাঁড়াও 

ছবি তোলো 

ফেসবুকে দাও 

ক্যাপশনে লিখো 

শো অফ করে হলেও ক্ষুধার্তের পাশে দাঁড়ান।

 

ব্যাস

কোটি কোটি লাইক কমেন্ট কুড়িয়ে 

ব্যাংকে জমা দাও

তবুও বানচোদ তুমি 

কখনওই ক্ষুধা নিয়ে শিল্প চুদিও'না ।

Post a Comment

0 Comments