রোমেল রহমান এর কবিতা

                

 

নিজেকে বাঁচিয়ে খেলি

খুন হওয়া লোকটার গল্প শুনল না কেউ!
বাপহারা মেয়েটার ক্রন্দন শুনল না কেউ।
মর্গে দাঁড়িয়ে মেয়েটার তাক করা চোখ হতভম্ব দুঃখের দরিয়ায় — অচেনা অবাক !
তবু কেউ পাত্তা দিল না এই খুন, এই আহাজারি। 
আমরা কেবল শুনলাম দমে দমে —
 উন্নয়ন 
         উন্নয়ন 
                 উন্নয়ন... 
লেজে উন্নয়ন 
      মাজায় উন্নয়ন 
      মাথায় উন্নয়ন...;
 
উন্নয়নে,
দেওয়াল গেঁথে দিয়েছি...
... বাড়ি তুলে দিয়েছি
নদী কেটে দিয়েছি...
 কিংবা
..সব মাটি ঢালাই করে দিয়েছি...!
 
নিহতের লাশ বয়ে নিতে নিতে আমরাও আমাদের সাহস হারিয়ে চুতিয়া হয়েছি। 
এতিম মেয়েটা শুধু অপলক চাহনি ছিটিয়ে গেলো উন্নয়ন যুগের ইতিহাসে। 
আমরা নিজেকে বাঁচাতে নির্বাক সেজে গেছি!
 
উন্নয়ন এলে সব হাহাকার কংক্রিট হয়।

ডোম

গ্রীবা থেকে নেমে যাচ্ছে রাত,

ভোর এলো ; মৃত্যুর শোক তবু উবে গেলো না।

শালিক পাখির কোলাহলে ঘুম ভেঙে দেখি সবুজ কাফনে মোড়া বেদনার মাঠ।

নৌকা ডুবিয়ে রেখে গেছে লুটেরার দল।

শাপলার বিলে ভাসে মানুষের লাশ।

গতরাতে বন্দুক যুদ্ধ খেলেছে কারা..?

আমার তবুও ক্ষিধে পায়,

গরম ভাতের ভাপ টঙ্কার তোলে নাভীর চিতায়। এই মৃতদেহ থেকে ঐ মৃত দেহে ছুটে যাই!

কাউকে ঠেকাতে পারি নাই, সব লাশ লাশ হয়ে আছে। জবার ঝাঁকানো গাছে ফুলের বিরাম তবু নেই। মা কালির কিরে, তন্ত্রে সিদ্ধ হলে আমি সব মরায় জীবন টেনে এনে মিছিল সাজাবো। 

বিদ্রোহ জ্বেলে দেব শহীদের সব গলিপথে।