শুয়োরের বাচ্চাদের রাষ্ট্র থাকে না
রোমেল
আমার বন্ধু
ইলিয়াসের চ্যালা, সাহিত্যের কেউকেটা
খোয়াবনাম কিভাবে ক্ল্যাসিক, হুমায়ূন আজাদ কেন এতো গুরত্বপূর্ণ। কতোটুকু প্রয়োজন ফরহাদ মজহার
কাছে দাঁড়ালে বলতে থাকবে বিশ্ব সাহিত্যে হাঁড়ির খবর
একদিন শাহবাগে তিনি বললেন-- আসুন, আমরা কিছু খাই
বলেই একটা ফাস্টফুডের দোকালে ঢুকলেন
চারটা বিস্কুট কিনলেন। মাত্র চারটা বিস্কুট
দাম
একশ ষাট টাকা
গরীব মানুষ আসলেই শুয়োরের বাচ্চা
কি সব অখাদ্য কুখাদ্য খাই
বিস্কুট যে এতো স্বাদের হতে পারে সেদিনই প্রথম বুঝলাম
বড়ো লোকেরা না জানি আরো কতো স্বাদের খাবার খায়
রোমেল বললেন- সকল মানুষ ই সমান
আর এ বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, কার্ল মার্ক্স বা আমাদের সংবিধান কোথায় কি বলেছেন। ইলিয়াসই বা এ বিষয়ে কি ভাবতেন ক্রমাগত বলে গেলেন
আমি বললাম- হুম
এখন এ মহাদুর্যোগের দিনে
সঙ্গনিরোধ বসে আছি ঘরে
আমার যদি একটা রাষ্ট্র থাকতো!!
নাকি
শুয়োরের বাচ্চাদের রাষ্ট্র থাকে না
রোমেল, এবার আপনি নিশ্চয়ই দ্বিমত করবেন না!!
২.
কার্ল মাকসের জ্ঞান বুদ্ধি বালো আছিলো গো, বাবু
বাইরাসটারে বালোই বলিক,বাবু
ধনী গরীব সাদা কালো যারে পায়, গুয়া মাইরা দেয়
হামরা গরীব লোক আচি
শুয়োরের বাচ্চা বলেক, কোন আপত্তি করবেক লাই
পাছায় দুইডা লাথ্থি মারবেক আপত্তি করবেক লাই
হামার মাগি ঘরভর্তি বছর বছর শুয়োরের বাচ্চা পয়দা করে, কচু ঘেচু খাই। যা তা কই
হামি মরলে স্বগগে যাইবেক লাই
গো মাতার মুত আমি খাইনিক, বাবু
তর জ্বর আসলে বিদ্যাশ যাইবার পারবেক লাই
তুই ভদ্দরনোক আছিস, সাবধানে থাকিস
আমাগো দাস বানাইয়া হামার পিন্ডা খাইস
তবেক তুই স্বগগে যাইবেক পারবি
অনেক মরজিত বানাইচিস মহল্লায় মহল্লায়
কোবিড ১৯ বহুত সাম্যবাদ আছে গো, বাবু
৩.
এক দ্যাশে আচিলো এক অসুদ প্রশাসন
দ্যাশটা আছিলো গণতান্ত্রিক
একজন মেজর জেনারেল ক্যান্টুনমেন্টে থাইক্যা বাইর অইয়া জনগণের পোদের মইধ্যে অসুদ ঢুকায়
জনগণ ব্যথা না পায়, এজন্য নৌ পতে, আকাশ পতে বিদ্যাশ থাইক্যা আমদানি করে অলিভওয়েল
সারাদিন মেজর জেনারেল খাইট্যা মরে
কিন্তু পাবলিক খুব হারামি, শালারা
বালো মানুষের কদর বুঝে না
বিশ কোটি মানুষ, প্রতি দিন কতো কতো অসুদ আমাগো হুগায় ভরন দরকার অয়
একবার বুঝো, মিয়া?
জেনারেলদের কৃপায় আমরা ষাট পয়সার প্যারাসিটামল ২:৫০ পয়সায় কিনি।
পঞ্চগড় থাইক্যা তাইলে মিয়া তিনশ ট্যাকায়ও পাইতা না
তুমাগো তো প্যাটের ব্যারাম। গ্যাস্টিকে বুক জ্বলে
ধাতু দুর্বলতার অসুক; শীতকালে খাড়ায় না
তুমাগো ধানের মইধ্যে অসুদ দ্যায়
তুমাগো শাগের মইধ্যে অসুদ দ্যায়
তুমাগো ফলের মইধ্যে অসুদ দ্যায়
দুই চোক্খে যা দেখবা সব অসুদ
অসুদ খাইয়া অসুক অইলে আবার অসুদ দিবো
তারপর জেনারেলগো হাসপাতালে তুমাগো ভর্তি করবো আবার অসুদ খাওয়াইবো।
একদিন ঘুম থাইক্যা উইঠ্যা দেখবা তুমাগো ভাত খাওনের দরকার নাই
তুমরা অসুদ খাইবা আর অসুদ হাগবা
তবু হালা বান্ডির পুত
এমন দ্যাশপেমিক জেনারেলগো চিনলা না?
সোনার মাকড়ি
মাকে আমি কখনো সাজতে দেখিনি
ঠোটে লিপস্টিক
স্নো বা পাওডার।
লম্বা চুলের ফিতা বা ক্লিপ
পায়ে দেয়ার আলতা
এগুলোর মায়ের কিছু ছিলো না
তবে মায়ের একটা কানের মাকড়ি ছিলো
স্বর্ণের
মা সেটা পড়ে ভাঙ্গা আয়নায় মুখ দেখে চুল আচঁড়াতো
এটাই তার সর্বচ্চো সাজুগুজু
মা আমার পরীক্ষা আগামী মাসে
তারপর মা তার কানের মাকড়ি খুলে
রসো কর্মকারকে দিয়ে বলতো - দুই মাস পরে নিয়া যামু;
সুদ নিয়া ঘুরামু না, দাদা
তয় এতো ট্যাকা দিবার পারুম না, দিদি
২৫'শ লাগবো আমার। দেও, দাদা,পুলার পরীক্ষা
সময় মতোই দিয়া দিমু
না, দিদি, আমি পারুম না
দেও, দিমানি তো কইলাম
যা পারুম না, তা চাইলে ক্যামনে দিমু
তুমি যাও, আমার কাম আচে
রসো কর্মকার কাজে মন দেয়
মা বসে থাকেন; কালো বিবর্ণ মুখ
আমি তার আঁচল ধরে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকি
বাইরে আসি, হোটেল থেকে পানি খাই
ক্ষুধায় পেট পুরে যেতে থাকে
প্রতিবারই রসো দা সে চেনা মাকড়ির খাটিত্ব পরীক্ষা করতেন এবং ওজন দিতেন
মা গুনে গুনে আমার হাতে টাকাগুলো দিতেন
লজ্জ্বায় আপমানে আমি ছোট হয়ে যেতাম
এখনো পরীক্ষার শব্দটি শুনলেই মায়ের মাকড়ির কথা মনে পড়ে
ভয়ে লজ্জ্বায় আমি ছোট হয়ে যাই
পরীক্ষার প্রতিশব্দ কি তবে মায়ের কানের পাঁচআনা
সোনার মাকড়ি
আপনি চিনবেন না তারে
আপনি তারে চিনবেন না
এলোমেলো রুক্ষ চুল, তামাটে
মেয়ের বিয়া এককানি জমি এ্যাহুনি বিক্রি কইরা আইলো
বৌয়ের হাপানি রোগ এবার ডাক্তারের কাছে যাইবো
ছেলেটার বারোমাসি পেটের ব্যামো
কিস্তিওয়ালা বাড়ি বইস্যা রইচে
হেরা বালো লোক বিপদে ট্যাকা দেয়
তয় কিছু অপমান অপদস্ত করে
সুদ ইটু বেশি তাতে কি ট্যাকা তো দ্যায়
এইডা তার শ্যাষ জমি এ্যাহুনই বিক্রি অইলো জলের দামে
বীজ তার ভীনদেশের বেনিয়া ব্যাচে
কীটনাশক খায় কলিজার মাংস
বোকা লোক
দাম না পাইলে কি অইবো চাষ তার চিরকালিন অসুখ
রক্তের ভিত্রে পুকা
বাতুরে দাঁড়িয়ে দ্যাহে সবুজ ধান শিষ
লোকটা বোকা
আপনি চিনবেন না তারে
আমি যে ধানের সন্তান তাই তারে ভালো কইরা চিনি
আপনি একজন মানুষ
ধরুণ আপনি একজন মানুষ
আপনি সব সময় খেতে থাকেন
ক্ষুধা লাগলে খাবেন এটা তেমন নয়
ক্ষুধা না লাগলেও আপনি খাবেন
যেন খাবার ছাড়া আপনার কোন কাজ নাই
আপনি ভাত খাবেন, ভুট্রা ঢেড়স খাবেন
পটল, কুমড়া খাবেন, ব্রিফ বার্গার স্যান্ডুইচ খাবেন
আপনি সর্বভূক, হাতের কাছে যা আসবে
মানুষের হৃদয়, মাটির আত্মা, প্রাণিদের
রক্ত মাংস, কৃমি-কীট কিছুই বাদ যাবে না
এরপর গাছের হৃদপিন্ড, পৃথিবীর ফুসফুস
সমুদ্রকে হাতের মুঠে নিয়ে ছিড়েকুড়ে খাবেন
তারপর একদিন গাছ খেয়ে আপনি শেষ করে দিলেন
সমুদ্রের কান্না হয়ে গলে গেলো এন্টার্কোটিকা মহাদেশ
পৃথিবী বিগরে, উগড়ে দিলো লক্ষ কোটি টন
কার্বন ডাই অক্সাইড
আপনি দেখলেন
আপনি মূলত খেয়েছেন আপনার নিজের হাত, পা এবং হৃদপিণ্ড
0 Comments