জ্যোতির্ময় মুখার্জির কবিতা
জল
জল আর কথা বলে না
জল আর কথা শোনে না
চুপচাপ। চুপচাপ
জলে ভাসে আমার ছায়া
গোপন কুঠুরিতে কখনো কবিতা বাঁচে না
কবিতা হোক এমন কিছু
যা দিয়ে অন্তত একটা ঘর বানানো যায়
বাড়ি বানাতেই হবে
এমন মাথার দিব্বি কে দিয়েছে?
এক ফালি বারান্দা। ছোট্ট একটা ঘর
কারণে অকারণে তোমার আমার
জানালাগুলো খোলা থাক, দরজা’ও
প্লিজ্, পর্দা টাঙিয়ো না ঘরে
তুমি কি জানো না,
গোপন কুঠুরিতে কখনো কবিতা বাঁচে না
মৃত্যু
সব মৃত্যুতেই যে চোখে জল আসবে এমন নয়
কিছু মৃতদেহ শুকনো করে চোখ
কিন্তু প্রতিটি মৃত্যুই চোখের পিছনে
খুলে দেয় একটা চেনা খাতা
ফাঁকা, হলদে ধূসর
শুধু মার্জিন জোড়া কিছু এলোমেলো রেখা
বিনিময় শ্লেষ
দ্যাখো, ভিতর ভিতর চওড়া হলে
সমস্ত প্রজাপতিই বৃষ্টি ধুয়ে যায়
আমি আনন্দ লিখলাম
আর তুমি পোষা সূর্য থেকে জিতে নিলে
বিনিময় শ্লেষ
কিছু গুঁড়ো পালকের ভঙ্গি
অসুস্থ ফ্রেম্
বা কিছু গুঁড়ো পালকের ভঙ্গি
ভেঙে ভেঙে
নবমীর সাঁঝে
ওরা ছোট হয়ে আসছিল
আর আমি
তেমনি কে যেন বৃত্তের মতো
সহজ অভিমানে
খুলে রাখে বাড়ি ফেরার পথ
মশারি
দাম্পত্য জীবনে সবচেয়ে বড়ো সমস্যা, মশারি
কে টাঙাবে?
কে'ই বা খুলবে?
এই নিয়েই কেটে যায় কিছু সকাল ও রাত
আসলে দাম্পত্য'ও অনেকটা মশারির মতো
একটা আর্টিফিসিয়াল ঘর
যৌথ মেঝে
যার, ছাদ ফুঁড়ে সিলিং ছোঁয়া যায়
আলগোছে এসেছ পথিক
হয়তো পথ ভুলে
হয়তো ভুল পথে
আলগোছে এসেছ পথিক
সবটুকু
ওইখানে পা রাখো, ওইখানে
এইতো সহজ। মুঠো ভরে
কবেকার অপ্রস্তুত ভুল
থ্রিলার
আমার ভালোলাগে না এসব, আমার পছন্দ
নয় কেউ আমার ভিতর বসে সাপ-লুডো খেলুক
কখনও সিঁড়ি বেয়ে উঠে, কখনও বা
সাপের মুখে নেমে। থ্রিলার সেটা নয়
থ্রিলার এটাই যে, ছক্কা পড়ছে না দেখেও
বারবার ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে
পুটের দান ফেলে যাচ্ছি
জলের অপরাধে...
ঠিক মেঘ নয়, ধোঁয়া ধোঁয়া
একটা মেঘের আস্তরণ খসে পড়ছে
আমার গা থেকে
আমি তখন ভোর হয়েছে ভেবে ঝরতে ঝরতে শিউলি
অসাধারণ হুটোপুটি বা ধুলো মুড়ে অভ্যাসের দাগ
আর দেখছি, কীভাবে
জলের অপরাধে মেঘ হয়ে যায় বৃষ্টি
স্বপ্ন
আমার ঘুমের কোনও রং নেই
ও রং ভালোবাসে না
স্বপ্ন দেখলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে
এইটুকুই বলতে চেয়েছিলাম তোমায়
আর তুমি
স্বপ্ন দেখালে
0 Comments