রিইনকারনেশন
কল্পনায় অজস্রবার ম'রে গিয়ে সত্য জেনেছি
উপকূলে জাহাজ ডুবে গেলেও মাস্তুল টিকে থাকে।
মৃত্যু এতোটাও জটিল রীতি নয় – আপাত বিরহ – দুরূহ কল্পনা।
ভেজাল মানুষের ভিড় ঠেলে অনেকে হয়ে গ্যাছে শুদ্ধ পতঙ্গ
জীবনের চেয়ে পরিদৃশ্যমান এই রূপান্তর বাতাসে লেগে আছে,
নক্ষত্রের গুঁড়ো দিয়ে গড়া পৃথিবীর কন্ঠে পুনর্জন্মের স্পষ্ট আবৃত্তি।
এই তরু, শিশু, নারী, কুকুর – শক্তির বিভিন্ন প্রকার
লৌকিক মরণে খুঁজে নেয় আনকোরা খাঁচা।
উদাস শীতের সকালে – হে সূর্য তুমি কুয়াশালুপ্তির পয়গাম;
এই অনুবর্তিতা একই চক্রে গেঁথে ঘুরছে আজতক – কুকুর – মানুষ – মানুষ – কুকুর।
রেসিং ট্র্যাক
জীবন – বিক্ষিপ্ত ঝাউবন – সেই বনের বিন্যাসে
ওঁত পেতে থাকে কতিপয় নির্ভেজাল তস্কর
রঙিন রসদ কুড়ানোর পরকালে উল্লাসে নেচে ওঠে তারা।
অন্তহীন ভ্রমণের বালুকায় দুইদিন অথবা
ততোধিক নির্বসন শোকের অবকাশ নেই তবুও
সহসা দৌড়েও ছোঁয়া যায় না ফিনিশিং লাইন।
আমরা নবীন যাত্রী – স্বপ্রতিভায় সর্বোচ্চ মৃত্যু পর্যন্ত পৌঁছাতে পারি।
অসুখের বিজ্ঞাপন
শহরে —
আলোর রঙ কালো।
বাতাসের রঙ নীল।
কুকুরের পায়ে স্কেট রোলার
ওদের ছোটার গতি মানুষের তিন গুণ।
দ্বিগুণ উচ্ছ্বাসে পাতের ভাত ঠোঁটে উড়ে যাচ্ছে অশুভ দাঁড়কাক।
রাজহাঁস সাঁতার ভুলে আরামকেদারায় ব'সে টানছে এক্সপায়ার্ড চুরুট।
যাবতীয় ব্যর্থতা ভুলে ওভারব্রীজে ম্যারাথনে নেমেছে
বাস্তুচ্যুত শ্লথের অনুজেরা – দাঁতে ময়লা, পিঠে কালশিটে।
আমরা প্রতিদিন – একটা কবিতা লিখবো ব'লে
সান্ধ্য পানশালায় ঢুকে বমি ক'রে আসছি নান্দনিক গ্লাসে।
অতঃপর বাড়ি ফেরার পথে সবচে' কম বয়সী
নিশি কন্যার আঁচলে ঘুমিয়ে পড়ছি – মা ভেবে।
গ্যাসমাস্ক পরিহিত বাদুড়েরা
ইলেকট্রিক তারে ঝুলে ঝুলে
হারিয়ে ফেলেছে বেঁচে থাকার দম।
পাথরচাপা ঘাস ভুলে গ্যাছে মহীরূহ হওয়ার স্বপ্ন।
জীবিত থাকার ব্যকরণ রপ্ত করার ছুতোয়
ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গ্যাছে সবচে' বাধ্য সন্তানটিও।
শহরে মৃত্যুর কালোবাজারি।
শহরে অসুখের বিজ্ঞাপন।
শহর – এক মাংসের দোকান,
আমরা দাঁতাল ক্রেতা।
শহরে —
আলোর রঙ কালো।
বাতাসের রঙ নীল।
মালতীর প্রতি
এখানে প্রবল খরা
মালতী, আঁচল সরাও
তুমুল বৃষ্টি হোক
পৌনঃপুনিক অ্যালার্ম
ল্যাম্পপোস্ট নিভে গেলে জ্ব'লে ওঠে সময়।
কাক বুঝে যায় এখন সময় প্রাতরাশের।
বয়সী শরীর প্যাডেল চেপে ভাত খোঁজে।
এক লহমায় অন্তর্বাস তুলে নাও রুটিনমাফিক,
আমরা জেনে যাই আরেকবার ম'রে যাওয়ার দিন এসে গেছে।
0 Comments